Sunday, 1 June 2014

চ্যাপ্টা গোলাপ

ভোরের হাওয়া গায়ে লাগতেই আয়নাটা আড়মোড়া ভাঙল দেওয়াল জুড়ে। সকাল হয়েছে। বাড়িতে ও সব থেকে বড় আয়না বলে ওর থাকা-শোওয়ার জায়গাটা সবার চাইতে বড়।

বাড়ির বড় বউ সকাল সকাল স্নান সেরে আয়নার সামনে এসে দাঁড়ালেন। গায়ে লাল শাড়ি, মাথার এক ঢাল কোঁকড়া চুল পরিপাটি করে আঁচড়ে নিলেন; চিরুনির একটা দিক সিঁদুরে ডুবিয়ে সিঁথিটা লাল সুরকির রাস্তা। লালের পরেই, গিন্নিমার প্রিয় রঙ সাদা। গলায় কানে মুক্ত, হাতে শাঁখা, খোপার কাঁটা আর জালেও সাদা পাথরের ঝিকিমিকি। আয়নার কিন্তু সব চাইতে ভাল লাগে গিন্নিমার গলার ওই দুটো লকেট...প্রথমটা ঠিক যেন ব্রিটানিকার ছোট একটা মূর্তি (কাছ থেকে সে দেখেছে লকেটের তলায় লেখা মিনারভা’); আর একটা হল, তিনটে সিংহের মুখ খোদাই করা লকেটটা। গলায় পরলে, রানির মত দেখায় বউমাকে।

সারাদিনের এক সমুদ্র কাজ বাকি। তার ঢেউয়ের শব্দে বড় বউয়ের সম্বিত ফিরল। কাজের মানুষটার কি আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে সময় কাটালে চলবে? যখন বিয়ে হয়ে এই বাড়িতে আসেন বহু বছর আগে, তখন এত দায়িত্ব ছিল না। এক বিদেশি কোম্পানির জুনিয়র কর্মচারীদের মেস ছিল বাড়ির একটা তলায়। তাদের খাওয়া দাওয়া, রক্ষণাবেক্ষণ ইত্যাদির দায়িত্ব ছিল বড় বউয়ের উপর। পরে থাকা-খাওয়ার পাশাপাশি তাদের দেশি ভাষা শেখানোর প্রচেষ্টাও চলল বেশ কয়েক বছর। হিন্দি, ফারসী শেখানো হত। বত্রিশটা মত ছাত্র, তাদের পড়ার ঘর, পরীক্ষা দেওয়ার হলঘর, লাইব্রেরি...সব মিলিয়ে বাড়ি প্রায় হোস্টেলে পরিণত। তারপর কিছুদিন বেঙ্গল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ চলেছিল, ইস্ট ইন্ডিয়া রেল কোম্পানির অফিসও। PWD-র অফিসাররাও কিছু অফিস ঘর ভাড়া নিয়েছিল একটা সময়। এই সব কিছুর সাক্ষী বড় বউ।

এখন রাজ্যের কাজ। পুরো পরিবারটার সব রকম দায়িত্ব একার কাঁধে। শেষবারের মত আয়নায় চোখ বোলালেন তিনি। এ বাড়ির সব মেয়ে-বউদের থেকে লম্বা ছিলেন একটা সময়; সেই নিয়ে খানিকটা চাপা গর্বও ছিল তাঁর। এখনকার বাঙালি মেয়েগুলো কি লম্বা লম্বা! কি ছিপছিপে গড়ন তাদের! নিজের ভারী চেহারাটা দেখে খানিক কষ্টই হল বেচারির।
********
অ্যান্ড্রুকে ডাক দিলেন বড় বউ। বহু বছর আছে সে এই বাড়িতে। লম্বা, ছিপছিপে চেহারা; এখন বয়েসের ছাপে সাদা চামড়া মলিন হয়েছে খানিক। তবুও ঠাঁটেবাটে এখনও সাহেব। এই বাড়িতে প্রথম এয়ার-কন্ডিশন মেশিন বসে ওর ঘরে। ও সাহেববলেই বোধহয়! নিজের ঘরে বসে আপন মনে বাইবেলের তত্ত্বকথা পড়ে সে।

একটা অভিনব জিনিস আছে অ্যান্ড্রুর কাছে। গল্পে, সিনেমায় যেরকম ওয়েদার ককদেখায়, সেরকম একটা। ওটা ছাদে রেখেছে সে। হাওয়ার গতি বলে দেয় ছোট্ট মোরগটা। আর আছে একটা মহামূল্য বড় ডায়ালের একটা ঘড়ি।
********
বাকিদের একে একে ঘুম থেকে তোলার আগে বড় বউ একতলার গাড়ি বারান্দাটা দেখে নিলেন একবার। সারি সারি গাড়ির মেলা বসে সারা দিন জুড়ে। গাড়ি রাখার জায়গার ঠিক ওপরের ঘরটাতে আয়না। গাড়ির চাকার তাণ্ডবে কতবার যে আয়নাটা কেঁপে ওঠে; মায়া হয় বউয়ের। এই আয়নাটা বড় প্রিয় তাঁর। এই বাড়ির সব থেকে পুরনো বাসিন্দা। ৩০০ বছরের ওপর নাকি বয়েস। কিভাবে এই বাড়িতে এলো সেটা সঠিক জানে না বাড়ির কেউই। শোনা যায়, সাবর্ণ রায় চৌধুরীদের জিনিস নাকি! কোন পারিবারিক সূত্রে পাওয়া। আবার এও কানে এসেছে যে লালচাঁদ বসাক নামক এক ভদ্রলোকের থেকে কেনা এটি। কেউ কেউ আবার মনে করে লাল মোহন শেঠ নামের এক ব্যবসায়ীর ছিল এই আয়নাটা।  
*******
উঠে পড় খোকা। ছেলেকে ঘুম থেকে তুলে দিলেন বড় বউ। ছেলে মস্ত বড় ব্যাঙ্কে কাজ করে। প্রচুর টাকার লেনদেন সামলায় সে। অঙ্কে দারুণ মাথা ছিল ছেলেটার; বুদ্ধিও তীক্ষ্ণ। শুধু চেহারাটা এবাড়ির মত পায়নি। কাকের বাসায় কোকিল ছানাকথাটার ঠিক উল্টো নিদর্শন! মায়ের দৌলতে লম্বা হয়েছে একগাদা; কিন্তু দেখতে...এই নিয়ে কি কম কথা শুনেছে পাঁচজনের কাছে? আহা রে!

*********
বড় ছেলের পাশের ঘরে থাকেন বড় বউয়ের দূর সম্পর্কের এক বোন। বয়েসে অনেকটাই ছোট, কিন্তু চেহারায় দুই বোনের ভীষণ মিল। এই বোনের বিয়ে হয়েছিল এক জমিদারের সঙ্গে। তখন জমিদারদের কালেক্টরও বলা হত। র‍্যালফ শেলডন নাম ছিল তাঁর। এক বিদেশি কোম্পানির প্রথম কালেক্টর তিনি। নন্দরাম, জগৎ দাস, রাম ভদ্র আর গোবিন্দরাম মিত্র ...এই চার ভদ্রলোককে নিয়ে শেলডন সাহেব তিন তিনটে গ্রাম সামলাতেন। সেই সময় শুধু খাজনা আদায় না, আইন-শৃঙ্খলা বজায় রাখা, রাস্তা তৈরি, ড্রেন পরিষ্কার রাখা এবং সর্বোপরি প্রজাদের ভালো-থাকার দায়িত্ব সবটাই ছিল জমিদারের ওপর। স্বামীর কল্যাণে বহুবার বাড়ি বদল হয়েছে এঁদের। এক সময় পার্ক স্ট্রীট-চৌরঙ্গীর ক্রসিংয়েও একটা বাড়িতে থেকেছেন কিছুদিন। তারপর চার্চ লেনের একটা বাড়িতে। সেই বাড়ি থেকেই তৈরি হয়েছিল প্রথম টাকা। ১৭৫৭ এর অগাস্ট মাস...একি আজকের কথা?

স্বামীর মৃত্যুর পর কাজের রকমফের হয়েছে কিছু। কাজ এখন অনেকটাই হালকা। দিনের প্রথমার্ধে কাজকর্ম গুটিয়ে, দুই বোন সিলিঙ-অবধি লম্বা বইয়ের তাক থেকে পুরনো বই নামিয়ে পড়েন। পুরনো কলকাতা গেজেটের বাঁধানো বইগুলো উল্টে পাল্টে দেখতে মন্দ লাগেনা!

*******
আর একজন বয়স্কা আত্মীয়ার ঘর ঠিক তার পরেই। সাদা তুলোর মত ধপধপে গায়ের রঙ। সাদা এক ঢাল চুলের বড় গোল খোঁপা মাথার ওপর। গায়ের রঙের কিন্তু একটা গল্প আছে। বুড়িমা’-র  বাবা ছিলেন সাহেব। ওয়াল্টার গ্রানভিল। সাহেবের অন্য দুই সন্তানও চোখ জুড়নো সুন্দর। বড়জন ২০০ বছরে পা দিলেন এই বছর। মহামূল্য বহু জিনিস সংগ্রহ করার শখ তাঁর। বাড়ি চৌরঙ্গী। অন্য সন্তানটিকে আইনের পীঠস্থান বলা হয়। থাকেন ওল্ড পোস্ট অফিস স্ট্রীটের কোণার বাড়িটায়। তাঁর কল্যাণে আমাদের মত অধমেরা করে খাচ্ছি

বুড়িমার কাছে একটা অদ্ভুত তিন-মুখো বিদেশি ঘড়ি আছে। তাঁর ঢং ঢং শব্দেই ঘুম ভাঙ্গে বাড়ির বেশির ভাগ সদস্যের। এই ঘড়ির বেলটা লন্ডনের বিগ বেন কোম্পানির তৈরি! ১৮৯৭ সালে। তখনকার দিনে সাত হাজার টাকায় কেনা! ঘড়ির একটা বিরল চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য ছিল। তিন দিকে তিনটে সময় দেখাতো... ইন্ডিয়ান স্ট্যান্ডার্ড টাইম, গ্রিনিচ মিন টাইম আর ক্যালকাটা টাইম। এখন সেই বহুমুখিতা নেই ঘড়ির। দম দিতে হয় একদিন অন্তর; নইলে কলকব্জা শিথিল হয়ে পড়ে। পতিত পাবন দত্ত নামক এক ভদ্রলোককে রেখেছেন এঁরা। তিনি আর তাঁর ছেলেরাই ঘড়ির পথচলার সঙ্গী।

দুর্মূল্য জিনিস সংগ্রহ করাটা বোন পেয়েছেন বড়দার থেকে। বহু পুরনো ডাক টিকিট আর বহু পুরনো টেলিফোনের মডেল সযত্নে রাখা তাঁর কাছে। সেই সঙ্গে পুরনো চিঠি। অলস দুপুরগুলো পৃথিবীর নানা কোণায় ছড়িয়ে থাকা আত্মীয় স্বজনের চিঠি পড়েই কাটে বুড়ির। ই-মেল করতে বা পড়তে পারেন না বলে কিছু মানুষের কাছে হাতে লেখা চিঠিতেই হাতে স্বর্গ পাওয়া!

*********
বুড়ির পাশের ঘরটা যাঁর তিনি কাজ করেন ইনসিওরেন্স কোম্পানিতে। ব্রিটিশ যুগের সাবেকিয়ানা অনেকটাই বজায় রেখেছেন ভদ্রলোক। কালো গোল ডায়েলের টেলিফোন, পুরনো দামি কাঠের আসবাব, অমূল্য বইয়ের অবারিত সম্ভার, সব মিলিয়ে তাঁর সারা গায়ে আভিজাত্যের গন্ধ।

********
বড় বউ এক ফাঁকে ডেকে দিলেন তাঁর মেয়েকে। মেয়েটার কপালটাও দাদার মত। মায়ের মত লম্বা হয়েছ ঠিকই। কিন্তু আর কোন শ্রী নেই চেহারায়। আর কি ভীষণ ধিঙ্গি! সারাদিন টেলিফোন আর টেলিফোন! এত কিসের কথা! কার সাথেই বা কথা? “এই মেয়ের বিয়ে দিতে এক জঙ্গল কাঠ আর একশোটা খড়ের গাদা পোড়াতে হবে আমায়”, দীর্ঘশ্বাস ফেলেন বড় বউ।

*********
বড় বারান্দার কোণের ঘরটা যে মহিলার, তাঁর পিঠে বয়েসের ভার। নানা অসুখও দানা বেঁধেছে শরীরের আনাচে কানাচে। কিন্তু বাইরেটা যতটা সম্ভব পরিপাটি করে রেখেছেন। এই বয়েসেও ঘি রঙা লাল পাড় গরদের মোড়কে তিনি অনন্যা। ভালো আছি ভালো থেকো, আকাশের ঠিকানায় চিঠি লিখো” ... এই শব্দগুলো যেন ওনার জন্য লেখা। যে সব চিঠির প্রাপ্তি স্বীকার করে না কেউ, পোস্টম্যান এসে সেগুলো দিয়ে যায় ওঁকে। উনি সেই অনাথ চিঠিগুলোকে ঠাঁই দেন নিজের আলমারিতে। অগুনতি সন্তান নিয়ে ভরা সংসার, শরীরের জরা-যন্ত্রণা ভুলে আবির-মাখা হাসি চোখে মুখে।

শান-বাঁধানো ফুটপাথে, পাথরে পা ডুবিয়ে এক কাঠখোট্টা গাছ
কচি কচি পাতায় পাঁজর ফাটিয়ে
হাসছে।

ফুল ফুটুক না ফুটুক
আজ বসন্ত...
*******
বাড়ির যে মানুষটা সব থেকে কষ্টে আছেন, তাঁর কথা বলি। দুরারোগ্য ব্যাধি। ডাক্তাররা প্রায় জবাব দিয়েছিলেন। অথচ কম বয়েসে কি ডাকসাইটে লোক ছিলেন ইনিই। রূপে গুনে একাকার। আর সেই সঙ্গে বিশাল প্রতিপত্তি। আলাদা আলাদা দেরাজে রাখা থাকত নোট আর সোনার কয়েন। রুপোর পয়সায় ঠাসা ছিল একটা বড় আলমারি। তখন পাড়ার লোকে পুরনো, নোংরা, ছেঁড়া টাকা বদল করতে আসতো এঁরই কাছে। শরীর ভাঙতে শুরু করলে, দাদু তাঁর নাতিকে সব বুঝিয়ে দেন। বড় বউয়ের ছেলেই সেই নাতি। ব্যাঙ্কের সবরকম কাজ এই দাদুর থেকেই শেখা। ওনার কর্মজীবনও যে শুরু হয়েছিল আগ্রা অ্যান্ড মাষ্টারম্যান্স ব্যাঙ্কে চাকরি সূত্রে।


এখন শুধু স্যালাইন আর ওষুধের নল সারা শরীরে। বাঁচানোর শেষ প্রচেষ্টা। দেখা যাক...

*********************************************

ভুতুড়ে বাড়িটার দিকে কি তাকিয়ে আছেন? লাইন যে এগিয়ে গেল!

ওমা, হ্যাঁ, তাই তো! দ্রুত পা ফেলে এগিয়ে গেলাম বেহালা-বিবিডি-বাগ বাসের দিকে। অন্তত বাসচালকের পেছনের কাঠের সিটটা পেলেও উঠে পড়ব।

সাত বছর আগের কথা। ফক্স অ্যান্ড মণ্ডলে সবে ঢুকেছি ট্রেনী হিসেবে। প্রথম দুমাস কোন stipend পাইনি। তখন শ্বশুরমশাই হাত খরচ দিতেন হাজার টাকা। বরও ওই টাকাই। দুহাজারে বাস ছাড়া অন্য কিছু নেওয়া যেত না। (তারপরও মাসের শেষে টাকা জমত আমার!) রোজ কালো জেলি-লজেন্স কিনতাম ফেরার পথে। তিন টাকায় ছটা। মাঝে মাঝে আমলকী (পেস্তা রঙের, শুকনোগুলো না)। আর একবার ভীষণ শখ করে দশ টাকা দিয়ে সুখী গৃহিণীর টিপস্। সেই বইয়ের বিশেষ কোনও টিপস্ আজ আমার মনে নেই, একটা ছাড়া। একটা কাঁচের গ্লাসের মধ্যে যদি আর একটা কাঁচের গ্লাস আটকে যায়, তবে তলারটা গরম জলে ডোবান, আর ওপরেরটায় ঠাণ্ডা জল ঢালুন। গ্লাস দুটি একে অপরকে ছেড়ে দেবে।

(ছেড়ে দেওয়া সত্যিই যদি এতটা সোজা হতো...)

*********
এটা শেষ সপ্তাহ আমার এই অফিসে। যে কোন দুটো কাঁচের গ্লাস যখন আলাদা হয়, কিছু সুন্দর স্মৃতি নিয়েই আলাদা হয়। আমার এইটা! প্রথম আড়াইটা বছর রোজ অফিস থেকে বাড়ি ফেরা, ইস্টবেঙ্গলের জার্সি পরা মেরুন-হলুদ মিনি বাসে। লাল দিঘির পাশে দাঁড়িয়ে থাকতে থাকতে হাঁ করে দেখতাম চারিদিকের বাড়িগুলোকে। রাইটার্সসেন্ট অ্যান্ড্রু’স চার্চ, RBI, ক্যালকাটা কালেক্টরেট, GPO, রয়্যাল ইনসিওরেন্স বিল্ডিং, টেলিফোন ভবন, ডেড লেটারস অফিস, কারেন্সি বিল্ডিং... ... রোজ নতুন করে অবাক হতাম। : )

কলকাতা যে কতটা সুন্দর তা জানতেই পারতাম না, এই পাড়ায় অফিস না হলে...

*******
তখন অনেক রাত তখন অনেক তারা মনুমেন্ট মিনারের মাথা
নির্জনে ঘিরেছে এসে; মনে হয় কোনদিন এর চেয়ে সহজ সম্ভব
আর কিছু দেখেছি কি; একরাশ তারা-আর-মনুমেন্ট-ভরা        
                                                                                                কলকাতা?...”

ঠিক ১০০ বছর আগের ছবি। ১৯১৪। আজও একই রকম সুন্দর...(ইন্টারনেট থেকে নেওয়া)

 ছোটবেলায় বাড়িতে কোল্ড ড্রিংকের বোতল শেষ হয়ে গেলে, ভালো করে ধুতে দিতাম না আমি। জল খেতাম ওই বোতলে, যাতে শেষ হওয়ার পরেও স্বাদ আর গন্ধটা লেগে থাকে...

আর রাখতাম পুরনো খাতার ভেতর গোলাপ ফুল...গন্ধ চলে গেলেও স্মৃতিটুকু তো থাকবে!

******************

Friday, 9 May 2014

Baba

When one Mr. Gangopadhyay got to know that his would be son in law’s father was in the West Bengal Police Services, his eyebrows took an inverted U-turn. After all, ‘Judgmental’ is a Bengali’s second name. He asked me if I had met the father of the groom. I said, I did.

I had just appeared for my Higher Secondary boards then. The boyfriend introduced me to his father. I was tensed and perhaps spoke a little more than what was required. (Yes, I talk more when I am tensed, sad, happy, angry….okay okay, I generally talk slightly more than the rest of the world. So?). When I left their place, he told his son, “Meyeta kharap na. Kintu khub beshi kotha bole”. (She is otherwise okay, but too talkative for comfort). The son handed over the report card to me and I could see my heart break into two halves, the insides being churned, chili flakes and onion being sprinkled and an omelet being made out of it on a frying pan. : (

I sent him a note a few days before our wedding day. “I don’t think you like me because I talked a lot on the first day. But I was a kid then. I hope that the first impression won’t have an effect on the lifelong engagement we two are about to begin.” In response, a five-page letter (big sheets) arrived which referred to me as “Paramadorer Parama” and by the time I finished reading, the fears turned tears and my doubts turned Dr. Hajra…….Vanish!

When my father met him for the first time, he came home and told me, “He should have been a writer. He talks like a poet”.  The marriage happened smoothly thereafter.

Strangely, we came a long way. Our relationship elevated from ’formal, all-smiles’ to ‘brutally scold each other and protect each other with all our might, as the case may be’ status. I am happy we took time to love each other. Because, I have begun to believe that relationships that happen in a jiffy, take no time to crumble.
***********************************
Last year, my father and I were going to Shantiniketan for a day-trip. My mother wasn’t in town. My father in law packed food for the road trip. Yes, he is strangely and uncannily caring. ‘Tiffin’ cakes, chocolate biscuits, cookies, shondesh and Frooti (small tetra pack with a white straw). I was very happy.

After having finished off most of the things, I found, lying at the bottom of the jute bag, a handful of Hajmola candies, Chocolate éclairs, Parle orange lozenges and Fatafat. My heart skipped a beat and my throat gulped a tiny lump. I realised for the umpteenth time that the phrase “Daddy’s little girl” was not meant for biological fathers alone.
**************************************
This year’s picnic had prawns on the menu. I am allergic to them. While everyone was busy making prawn-hillocks on their plates, I was controlling the flow of saliva which could, at any given moment put Niagara Falls to shame. Baba called me, handed over a strip of Avil 250. “Gulp this quickly and go ahead.”

‘Why are you carrying Avil to a picnic????’ I was startled.

He flashed a smile. A smile roughly translated would mean, “I knew the menu. And, I know my greedy daughter”.

I will remember the smile for an entire life time. There was unfathomable love in that one simple gesture and it was a reason enough to love him forever. (PS: He flashes the same smile every time the Vodafone Roaming Bill ad comes on TV. :/)
********************************************
~ Hello, Baba?
He: Hyan Ma.
This unfailing response is one of the best in the world.
Drink water after consuming a piece of aamloki (Indian gooseberry). You will know the feeling.
*******************************************
In the midst of all the sunshine, we share cumulonimbus moments as well. He scolds me ruthlessly when the situation demands and he is so irritatingly accurate in judging me that it leaves me almost speechless. We have our stark differences as well. (I saw admiration in his eyes for Swastika Mukherjee’s character/performance in Jatishwar. I ultimately overlooked, considering the fact that it is a genetic problem among males in his family when they see Swastika. *deep breath*)
**************************************************
While I can go on and on with these asterix-lined paragraphs narrating the little stories of our lives, I decide to refrain. This post is not about how I turned Tulsi Virani or how he turned “Biswas-e melay Chhobi, Sanyal-e Pahari”. This is something about Baba which makes his daughter in law his greatest fan ever. Baba records everything in his life with utmost precision. He is the epitome of “you can fool some of the people all of the time and all of the people some of the time, but you cannot fool me”. His diaries from time immemorial are impeccable records of everything everything everything.

A few days back, I finished reading all of them. He not only allowed me to read them but also read out to me a few pages himself. Fathers and daughters have strange ways of bonding.

Well, it was soul stirring, to put it very mildly. And, I am tempted to share snapshots of the less-personal ones with you.



He has a detailed record of all the books he has read. Trust me, the six-seven fat leatherette diaries can put our Goodreads reading challenge to shame. The basic list contains names of the books he has read, name of the author, the date when he started reading it (and in most cases the year it was first published) and lastly, the ‘grade’ (ranging from A+ to C-). At the end of each diary, he mentions BF/Balance Forward and carries forward the ‘profits’ to the next year.





A more specific version of this record is a diary where he maintains, in columns, different years in which he has read the same book. Each year would have a different marking. Let me give you a hypothetical example.
Devdas ~ Sarat Chandra Chattopadhyay
1963 – A
1982 – B-
1997 – C+

He also has Author-wise lists in big fat diaries. In Baba’s ‘Literary Fests’, the 153 year old is an unchallenged chief guest. These lists have five columns. Name of the book, Publisher, the number of pages each contains, price of the book and the day he bought/received it. Can any list be more detailed? :D


(click to view a larger image)

Now that Baba has his own library, he has separate diaries for enumerating his collection. These lists are very basic. Name of the book, author and year of acquisition. Simple.




And what fun it is when you discover that you know some of the authors personally! :D
 *********************************************************
The man is equally passionate about the reel world. In his teens, he did not maintain a diary. So there were loose sheets. These lists have the following: Date of watching the movie, Name of the movie, Actors, Venue and people he watched it with. The venue ranges from “Dutter Mathh” (a public park where huge white clothes were used as projection screens and people would sit on the grass and enjoy the film) to multiplexes.


I keep on telling Joydeep, “I can’t believe that you are HIS son! What happened to his good genes?”  While flipping through his diaries I gulped back all those words. There are several days when he has watched four to five movies in a day!  He had told me that for Uttam-Suchitra movies, he and his childhood friend would book the first show in Basusree, watch it, run to Ujjala, watch the matinee show there, come back to Basusree for the evening show and call it a day with the night show at Ujjala again. Two movies, twice a day. Phew!!! Yes, good genes are adequately passed on to the two sons….


(He has seen Paapi Guriya [Serial No.80] as well! I always thought it was porn shown in cinemas like Prodip in Tollygunge)

He maintains his “Films I have watched” diaries like an accountant! Bengali (B), Hindi (H), Others (O), Grand Total. :D


Click for a larger image
On Poila Boisakh, I found stacks of Ruled Registers in College Street for sale. It reminded me of school, our Attendance Registers, Ma’s mark book and my father-in-law’s Sidhhu Jyatha records. Baba’s collection of newspaper clippings accumulated over the years is a treasure trove and makes him a quintessence of knowledge about everything under the sun. Books, music, theatre, politics, cinema, history, famous personalities, places, plants….name one and he has an answer to it. The best part about asking anything to Baba is, he not only gives you the correct answer, but also adds all the trivia connected with it. “Baba, which Rabi Thakur’s poem is this line from?” He will tell you the name of the poem, the year it was written, the particular volume of Sanchayita it belongs to and a few anecdotes as free gifts. Same applies to songs….Rabindrasangeet, Atul Prasad, Rajanikanta, D.L Ray to Kabir Suman, A. R. Rahman, Pritam et all. “Barir youtube”, my colleague called him.    

     (Yes, I have personal and biased reasons for putting this particular page. The newspaper cutting on the extreme left was written by yours truly's biological father)

  (And my father in law has his personal and biased reasons for putting this particular page. The advertisement on the newspaper cutting was made by his younger son)



********************************************
While reading his diaries and books, I found incense stick-covers made into book marks. The smell of lavender, patchouli, jasmine, sandal and ylang ylang guarded by pages on both sides. Scented memories of a very special man….


******************************************
Women often compare their husbands to their fathers. “You can never be like my dad!”, they say. I get tempted to say the same, every time JD calls my father Lalmohan Ganguly on account of the apparent similarities of their physical traits. But I refrain. He doesn’t need to be like my Dad. He has his fair share of good genes from the man I wrote about.
***************************************************

There are certain books in the book shelf which you don’t read for days. You just know that they are there.

Those same books are the first you pull out when you are standing at a crossroad of blind alleys.

Geetobitan is one such book. 
Baba is one such man.


Thursday, 17 April 2014

একুশে পা...

বাবা প্রতি বছর পয়লা বৈশাখের দিন কলেজ স্ট্রিট যেত। (আমি জানি লেখার সময় নিজের বাবা-মাকেও 'আপনি' লিখতে হয়। কিন্তু তাতে আমার লেখার স্বাভাবিক ছন্দ নষ্ট হয় বলে, আমি সেটা করছি না) মা, ভাই আর আমিও যেতাম। তারপর বিয়ে হল। "আজ মেলেছি যে পাখনা" হল, সেই সঙ্গে ঢাকনা-বিহীন প্রেশারও। চাকরি, সংসার নিয়ে ল্যাজে-গোবরে হয়ে অনেক কিছুই জীবন থেকে বাদ যাওয়ার জন্য তৈরি। কিন্তু তাদের "যেতে নাহি দিব" পণ করে এখনো আটকে  রাখতে পেরেছি ভেবে আনন্দে আঠ টুকরো হয়ে এখন ফেভিকুইক খুঁজছি 



পরশু বাবা-মায়ের সঙ্গে প্রায় সাত বছর পর কলেজ স্ট্রিট। পয়লা বৈশাখ এখন তো আগের মত নেই।ছোটবেলায় পয়লা বৈশাখ মানে সক্কাল সক্কাল পঙ্কজ সাহার দূরদর্শনের অনুষ্ঠানএকবার অন্তত দাদু-দিম্মার বাড়ি, নতুন 'বাড়িতে-পরার জামা' (কম দামি; পুজোর নতুন জামার থেকে অনেক কম দাম), সোনার দোকানের হাল খাতার মিষ্টির বাক্সে অমৃতি, লাড্ডু আর অম্বল-কচুরি বা চোঁয়া ঢেকুর-গজা, শিব-দুর্গার ছবি দেওয়া বড় এক পাতার ক্যালেন্ডার - যার মাসের পাতাগুলো হত সরু, নিচের দিকে.... এক পাতায় তিনটে মাস। তারিখগুলো সব নীল কালি দিয়ে লেখা, ছুটির দিন কমলা বা লাল দিয়ে আর পূর্ণিমা আর অমাবস্যায় চাঁদের ছবি আঁকা থাকত, তারিখ থাকত না। এইটা বলেই একটা কথা মনে পড়ে গেল।আমার ঠাকুমা তারিখের পাতাগুলো বছরের শেষে একসঙ্গে গুছিয়ে, মাঝখানটা মুড়ে, সুঁচ-সুতো দিয়ে সেলাই করে সাদা দিকটায় হিসেবের খাতা বানাতেন। পুরনো বছরের ক্যালেন্ডারের পাতায় নতুন বছরের হাল খাতা! (ডায়রি দিলেও উনি নিজের তৈরি খাতাতেই লিখতেন) :)  




আমাদের বাড়িতে ক্যালেন্ডারের চল কমে গেছে। পাখার হাওয়ায় সেটা ক্ষ্যাপা পেন্ডুলামের মত তাণ্ডব-নৃত্য করে আর দেয়ালের গায়ে গোল দাগ ফেলে দেয়। তাই বেচারির জায়গা রান্নাঘরের দরজার পেছনে। আমার শাশুড়ি-মা তো ঠাকুর-দেবতাকে নকুলদানা আর মিছরি খাইয়ে খাইয়ে ডায়াবেটিসের পর্যায়ে নিয়ে গেছেন। তার থেকে রান্না ঘরই ভালো। ক্যালেন্ডারে বসে মাছ মাংসের - গন্ধে আরাম-দিনযাপন।  

************************************

কলেজ স্ট্রিটে বোধহয় সবার একটা 'patent' দোকান থাকে। বাবার যেমন শৈব্যা পুস্তকালয়। (পুরনো, আউট-অফ-প্রিন্ট বা সেকেন্ড-হ্যান্ডদুর্লভ বই এলেই ওনারা বাবাকে ফোন করেন বলে)


এক চিলতে দোকান, এক চিলতে রোদ্দুরের মত। কি নেইঅঙ্ক নিয়ে কুইজ, নামকরণ সমগ্র, সেরা আবৃত্তির কবিতা সংগ্রহ, ছেলেদের মহাভারত আর সবার ওপরে, "সবার ওপরে" (প্রচ্ছদে সুচিত্রা সেন), অরিন্দম চক্রবর্তীর "ভাত কাপড়ের  ভাবনা এবং কয়েকটি আটপৌরে দার্শনিক প্রয়াস" (১৪২০ সালের আনন্দ পুরস্কার-প্রাপ্ত, যেটা ঠিক আগের দিনই ঘোষিত হল) আর ওই যে লাল গয়নার বাক্স.....ওটা "পদি পিসির বর্মি বাক্স" :) 



 বর্মি বাক্সের সঙ্গে মিষ্টির বাক্সও এলো। সেই সঙ্গে নতুন বিল-বইয়ে প্রথম বিল। আর উপরি-পাওনা: ঝকঝকে "আপনাদের-দিয়ে-বউনি-করলামহাসি। Priceless!


(পুনশ্চ: মা যখন কলেজে পড়ত, ওনার বাবার থেকে বই কিনত।)

******************************************

"ও আমায় টাচ করবে না" মৃত্যুর পর জোলো হয়ে যায় বুড়ো বয়েসকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে জনৈক ভদ্রলোকের সুচিত্রা সেনকে হাতে নিয়ে গদগদ হাসি ! :/



****************************************
রোদকে কাঁচকলা দেখিয়ে তিনজনের পায়ের তলায় সর্ষে-বাটা। বই পাড়ার অলি-গলি, সুখস্মৃতি, বই, মলাট, পুরনো বাড়ি, দিলখুশাপুঁটিরাম দেখে "এখানে বাবা আর আমি কলেজ লাইফে কত খেয়েছি" শুনে মনে মনে স্বস্তির  নিঃশ্বাস: "আমরাও".......     





প্রথম কদম ফুল আর আম পাতা জোড়া জোড়া -




ফুলের মশারি, তার মধ্যে বাঁটুল, হাঁদা ভোঁদার নিশ্চিন্ত গুটিসুটি।...


পড়াশোনা ~ এটা দেখেই মাধ্যমিক মনে পড়ে গেল! মার ধারণা ছিল বাংলা মিডিয়াম স্কুলের পেপার শক্ত (এবং বেশি ভালো) হয় এবং সেগুলো সঠিক solve করা আর আইনস্টাইন হওয়া মোটামুটি একই জিনিস। 



এটাও তো ছোটবেলার স্মৃতি। কিলো দরে রুল-টানা বা সাদা পাতা কিনে আনত বাবা কলেজ স্ট্রিট থেকে। সেটায় খুব ছোটবেলায় হাতের লেখা আর একটু বড়বেলায় অঙ্ক প্রাকটিস করতাম আমরা!


মৌচাক এখনো বেরোয়! কিন্তু এখনকার কোনো বাচ্চাই কি সেটা পড়ে?


নববর্ষের শ্রেষ্ঠ আকর্ষণ। কেনার আগে বেনীমাধব শীলের ছবি এবং "R" চিহ্ন অবশ্যই দেখে নেবেন। গুপ্ত প্রেসের আবার হেল্পলাইন নম্বর দেওয়া আছে! 

এখন তো বিয়ে বাড়ি ঠিক করে নিতে হয় বিয়ে ঠিক হওয়ার আগে। সত্যি! বিয়ে বাড়ির জায়গা পাওয়া আর ভগবানকে পাওয়ার মধ্যে দ্বিতীয়টা সোজা। তাই আগের বছর এই পঞ্জিকা বেরোনোর আগেই গুপ্ত প্রেসকে ১০০ টাকা (ঘুষ) দিয়ে, পয়লা বৈশাখের আগেই আমরা বিয়ের তারিখ গুলো জেনে নিয়েছিলাম। প্রতি মাসের তারিখ বাবদ ১০০ টাকা। হেল্পলাইন নম্বরটা বোধহয় ওই কারণেই দেওয়া। :/



অনেকটা হাঁটিয়ে নিয়ে গিয়ে বাবা কালিকার ছবি তোলালো। "একি! এটা তো বন্ধ। কেন আনলে এদ্দুর?" বাবার নির্লিপ্ত উত্তর, "ছবি তোলানোর জন্য। ওটা বিকেলেই খোলে।" :০

মাকে জিজ্ঞেস করায়, মার জবাব: "কলেজ থেকে আমরা এই রাস্তা দিয়েই হাঁটতাম; তখন কালিকার তেলে ভাজা কত খেয়েছি!"


আমাদের বংশটা প্রেম করে করে আর খেয়ে খেয়েই মরলো!



কি মন ভালো করা গেস্ট-লিস্ট! কতবার গেছি, ছবি তোলা হয়নি।...তাই। (বিশেষ দ্রষ্টব্য: যদি 'জন্ডিস-বরফ' না নেন শরবতে, তবে ২ টাকা বেশি দিতে হবে ) :D 


নববর্ষ বই উৎসব, কলেজ স্কোয়ারে। সারি সারি বইয়ের স্টল, ২০% থেকে ৫০% ছাড়। আহা! কিছু মানুষ সেসব দেখেও ছবি তোলার সময় গম্ভীর হয়ে থাকেন  
"বাবা, তুমি কি মুকুল? হাসছ না কেন?"
এটা তার ফল -


সারি সারি বইয়ের মধ্যেও একজন "নীলু আর পিলু" বইটা দেখে আনন্দে আত্মহারা। (নীল আমার ভাইয়ের নাম)। ছেলেকে ২৪x৭ মিস করার জন্য যদি টাকা দেওয়া হত, আমার মার নাম affidavit করে পাল্টে রাখা হত - ধীরুভাই আম্বানি।


পেট-পুজো - স্বাধীন ভারত আদর্শ হিন্দু হোটেল।(নিরানব্বই বছর বয়েস; ভবানী দত্ত লেন; নেতাজিও নাকি এখানে খেয়েছেন) মাটির ভাঁড়ে জল, কলাপাতায় খাওয়া, ডিউস বলের সাইজের মাছের ডিমের বড়া (যেটা আমার বিশ্বাস, তিমি মাছের ডিম), শুধু মাত্র 'taste' করার জন্য পুঁই শাক আর মাছের মাথার তরকারি জোর করে, সযত্নে দিয়ে যাওয়া, প্রত্যেক ওয়েটারের কানে গোঁজা chalk আর সেটা দিয়ে টেবেলের ওপর হিসেব লেখা.......সব মিলিয়ে স্বর্গ-সুখ



পান intended - 


এই দোকানটার ব্যাপারে লিখবনা; এটা নিজে গিয়ে অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে দেখতে হবে। ৫০১ থেকে ৫ টাকা সব রকমের পান আছে। কিন্তু যেটা পাগল করে দেয় সেটা হলো, ওদের সারা দেওয়ালে বাঁধানো প্রশংসা পত্র। ইন্দিরা গান্ধী থেকে পদ্মজা নাইডু, সর্বপল্লী রাধা কৃষ্ণনন থেকে বিধান রায়, ভানু বন্দোপাধ্যায় থেকে মান্না দে....কত লোকের যে নিজের হাতে লেখা গুনগান! তাক লেগে যাবে। 


  
বই পাড়ায় যে দুটো জিনিসের কথা না বললেই নয়। আপন মনে এই ছানাটির গনেশ-পুজো। চোখ আর কান দুটোই জুড়িয়ে গেল এক নিমেষে। আমার নিজের তোলা ছবির মধ্যে পছন্দের তালিকায় এটা সব থেকে ওপরে। 


আর এই ছবিটাও। গিজগিজে ভিড়ে কলেজ স্ট্রিট। বাংলায় লেখা নেম প্লেট দেখতে পেয়ে একটা illogical আনন্দ হলো ঠিকই, কিন্তু মন ভরে গেল অন্য একটা কারণে। একটা পুরনো ইন্টারভিউতে জোহরা সেগাল বলেছিলেন:

"Life, this endless conversation with yourself
Silent, in sanity, audible in madness...."


কথাগুলো যেন এই ছবিটার জন্যই বলা.....


**************************

অনেক ভালোলাগা নিয়ে বাড়ি ফিরে, আরাম করে, মায়ের গায়ে ঢলে পরে যখন ছবিগুলো দেখছি, তখন একটা জিনিস মনে হল....অনেক কিছু পাল্টালেও কিছু জিনিস একদম একই রয়ে গেছে নববর্ষের প্রথম দিনের। 


মিষ্টি - কেকের সাইজের মিঠাই :)




বাংলা ক্যালেন্ডার - এটা আজীবন সযত্নে তুলে রাখার মত একটা। প্রতিটি মাসে পশ্চিম বাংলায় যা মেলা বা উৎসব হয়, তার ফিরিস্তি। CESC এত ভালো ক্যালেন্ডার করে জানলে কোনদিন গয়নার দোকানে ছুটতাম না. :(



নতুন জামা- ভাইয়ের দেওয়া টি-শার্ট। দেখেই গলা ভার, আনন্দে। 

ছন্দপতন: "একটু বড় সাইজ আছে, জয়দীপও পরতে পারবে। লোকে ভাববে মমতা ব্যানার্জীর রেল-মন্ত্রী হওয়ার ক্যাম্পেন!"

:D  উপহার পেয়ে ঠিকঠাক করে যে সেন্টু খাব, তারও উপায় নেই।



১৪০০ সাল একুশে পা দিল। ওই বয়েসে আমি ঠিক করে নিয়েছিলাম পরের বছর বিয়ে করব। তার মানে, বড় হয়ে গেছে ধরে নেওয়াই যায়। এবার একটু ভালো হয়ে থাকুক। এবং সবাইকে ভালো রাখুক। শুভ নববর্ষ।